রাজধানীর মোহাম্মদপুরে দুটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার হওয়া সাবেক সচিব মো. শাহ কামালের নিজ জেলা চাঁদপুরেও রয়েছে একটি ৫তলা আলিশান বাড়ী ও সম্পত্তি। তিনি চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার পর প্রায় সময় এখানে এসে থাকতেন। সর্বশেষ গত ৪ দিন পূর্বে রাতের বেলায় গাড়ী নিয়ে এসে পুনরায় ঢাকায় চলে যান। তার বাড়ীটিতে এখন দেখাশুনার জন্য একটি দরিদ্র পরিবার রয়েছে।
শনিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে চাঁদপুর শহরের বনবিভাগ সড়কের খলিশাডুলি গ্রামে ১০ ইউনিটের ৫তলা ভবনের সন্ধান পাওয়া যায়। ওই বাড়িসহ তার সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৪০ শতাংশ। বাড়িটি পৌরসভার মধ্যে হলেও পুরো বাড়ির কোথায় পাওয়া যায়নি হোল্ডিং নম্বর। কৌশল করে তিনি হোল্ডিং নম্বর বসাননি। বাড়ির সামনেও নাম ফলক নেই।
শাহকামালের বাড়ীর উত্তরে আছে মো. নরুজ্জামান নামে ব্যাক্তির খান বাড়ি। দক্ষিণে মো. আবুল বারী মিঞা ও শাহিনা আক্তারের বাড়ী। ওই বাড়ির পৌরসভার হোল্ডিং নম্বর হচ্ছে ৯৯৭/৫। পূর্ব দিকে চাঁদপুর বনবিভাগের কার্যালয়।
খলিশাডুলি গ্রামের বাসিন্দা মজিদ পাটওয়ারী। তার পিতা ও আত্মীয়দের কাছ থেকে সম্পত্তি ক্রয় করেছেন শাহ কামাল পরিবার। মজিদ পাটওয়ারী বলেন, গত প্রায় ২০ বছর পূর্বে এই সম্পত্তি ক্রয় করেছেন শাহকামাল ও তার ভাই মাজহারুল আলমের নামে। তবে সর্বশেষ তিনি এইসব সম্পত্তি নিজের এবং স্ত্রীর ফারজানা সিদ্দিকা জুঁই এর নামে লিখে নিয়েছেন। কিছুদিন পূর্বে পাশের একটি জমিও কিনেছেন তার স্ত্রী নামে। বাড়ি নির্মাণ করার সময় আমি তার বাড়ীতে মাটি দিয়ে ভরাট করে দিয়েছি। ওই ভরাটের আড়াই লাখ টাকা বিল দিয়েছেন সাবেক মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদ। সাবেক সচিবের কাছে আমি এখনো সাড়ে ৫লাখ টাকা পাব।
স্থানীয় ব্যবসায়ী শাহ আলম বলেন, তিনি গত ৪দিন পূর্বে রাত ১০টার দিকে বাড়ীতে আসেন। আমি তার কালো রংয়ের গাড়ী থামিয়ে চা খাওয়ার জন্য বলি। পরে আসবেন বলে ঢাকায় চলে যান। তার এই বাড়িটি নির্মাণ কাজ ও সবকিছু সামলাতেন মিজানুর রহমান নামে ঠিকাদার।
খলিশাডুলি গ্রামের জিতু পাটওয়ারীর ছেলে জাহাঙ্গীর পাটওয়ারী বলেন, তিনি খুবই প্রভাব দেখাতেন এলাকায় আসলে। পৌরসভার সাবেক মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদের সাথে সখ্যতা থাকার কারণে সড়কটিও খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে পাকা করেছেন। তার ৫তলা ভবনটি ২০১৬ সালে চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর নিকট ভাড়া দেন। সমিতি তাকে প্রতি মাসে ৭০ হাজার টাকা ভাড়া পরিশোধ করতেন। ওই অফিস চলে যাওয়ার পরে এখন বাড়িটি খালি পড়ে আছে।
সচিব শাহ কামালের পিতার নাম মো. মোজাহেরুল হক। গ্রামের বাড়ী জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলা দ্বাদশ ইউনিয়নের কাপাইকাপ গ্রামে। ৮ ভাই-বোনের মধ্যে কামাল তৃতীয়। তিন কন্যা সন্তানের জনক তিনি। গ্রামের বাড়ীতে থাকেন তার বড় ভাই ডাঃ শাহজাহান। তিনি স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি। বক্তব্যের জন্য তার মোবাইল নম্বরে একাধিক ফোন দেয়া হয়। তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এই বিষয়ে বক্তব্যের জন্য সাবেক সচিব মো. শাহ কামালের ব্যাক্তিগত ৩টি নম্বরে কল দেয়া হয়। তিনটি নম্বরই বন্ধ পাওয়া যায়। যে কারণে বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।